২০১০ সালা হঠাৎ করে আমার জীবনে উজ্জ্বল সাফল্যময় সম্মানীয় জীবনের সূচনা ঘটে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর জৈষ্ঠ্য কন্যা, ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল সরকার, ডিজিটাল সন্তানের ডিজিটাল মা জননেত্রী দেশ রত্ন শেখ হাসিনা আমায় দিয়েছে কর্মসংস্থান, শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তার এ্যাওয়ার্ড ও পুরস্কার। চার বোন মা-বাবা নিয়ে আমার পরিবার। আমি সবার ছোট। বাকী তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। নিম্ন মধ্যবৃত্ত পরিবারের এক হতভাগী আমি। ২০০৭ সালে অর্থনীতিতে এম,এস,এস পাস করে কোন চাকুরী কপালে জুট ছিলনা। হঠাৎ ২০১০ সালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জনাব নাসির উদ্দিন আমাকে ফোন করে ১০ দিনের এক কম্পিউটার প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করার জন্য আমাকে দিনাজপুর জিলা স্কুলে যেতে বলেন। আমি সেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। প্রশিক্ষণ গ্রহণ কালে জানতে পারি প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে একজন মহিলা উদ্যোক্তা ও একজন পুরুষ উদ্যোক্তা নেয়া হবে। চাকুরির বয়স তখন প্রায় শেষের দিকে। আমি আর চাকুরির ধান্দা না করে প্রাণপণে উদ্যোক্তাগিরিতেই মননিবেশ করলাম। এই উদ্যোক্তাগিরি করতে গিয়ে আমাকে অনেক ধরনের চেলেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেবাগ্রহিতাদের কাজের চাপ এমনকি আমার সহকর্মী পুরুষ উদ্যোক্তার আমারকে অনেক ঠকিয়েছে। নানা ভাবে মানুষিক চাপ দিয়েছে। অবশেষে ঈশ্বরের কৃপায় সবকিছুকে জয় করে এখন আমি একা আলাদা কাজ করে আয়-ইনকাম করি। প্রথম প্রথম কিছুই বুঝতাম না। ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রে কি কাজ করব, কিভাবে কাজ করব, কাদের কাজ করব? ইত্যাদি সর্ম্পকে কোন ধারনা ছিলানা। ঈশ্বর সহায় ছিলেন বলে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য/সদস্যাগণ, সচিব ও গ্রামপুলিশ এবং ততকালীন ইউএনও মহোদয় তৌফিক ইমাম, এডিসি মহোদয় মিজানুর রহমান এবং ডিসি মহোদয় জামাল উদ্দিন স্যারের সহযোগিতা, পরার্মশ ও আন্তরিকতারয় ধীরে ধীরে দক্ষতা অর্জন করতে থাকলাম। ২০১৩ সালে জেলা পর্যায়ে সেরা নারী উদ্যোক্তার এ্যাওয়ার্ড ও পুরস্কার পেলাম। ২০১৫ সালে ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকতে আয়ের উপর ভিত্তি করে ২য় পুরস্কার পেলাম। এ পাওয়া আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পাওয়া। চাকুরি করলে এই সব হয়তো কিছুই পেতাম না। আমি তৃণমুলের তথ্য জানালা থেকে ইনফোলিডার মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমার দুটি লেখা "অনলাইনে পর্চা বাঁচিয়ে দিল খরচা" আর তবক পান নিয়ে লেখা দুইটি বইয়ে বেড়িয়েছি। এটাও আমার আরেক পাওয়া।
আমি মনে করি আমরা উদ্যোক্তারা গর্বিত। কেননা আমরা কাজ করি তৃণমুলের তৃণশ্রেনীর লোক থেকে সর্ব প্রকার লোকেদের সাথে। আর মিটিং করি প্রথম শ্রেনীর লোকেদের সাথে। এটা কয়জন চাকুরি জীবী করতে পারে? আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ২০১৪ সালে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কার্যলয়ে উদ্যোক্তা সম্মেলন করার। এটা আমার পরম পাওয়া।
প্রথম প্রথম আয়ের চেয়ে ব্যয় হত বেশি। এখন কাজের যেমন পরিধি বেড়েছে তেমনি বেড়েছে আমার আয়ও। আমি বর্তমানে নিন্মোক্ত কাজ গুলো করে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করছি।
১। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ
২। কম্পোজ/প্রিন্ট
৩। ছবিতোলা/প্রিন্ট
৪। ইমেইল করা
৫। অনলাইনে পর্চার আবেদন
৬। অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন
৭। অনলাইনে বিভিন্ন স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যাল ভর্তির আবেদন
৮। অনলাইনে পে-ফেক্সিশন
৯। অলাইনে টিন আইডি খোলা
১০। লেমিনেশন
১১। অনলাইনে বিভিন্ন চাকুরির আবেদন।
১২। এজাহার/জিডি কম্পোজ
১৪। স্ক্যান
১৫। বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়ন
১৬। অনলাইনে পল্লী বিদ্যুতের মিটার আবেদন ইত্যাদি।
আমি ডিজিটাল সেন্টারে ইনভেস্ট করেছি ১,১০,০০০/- +( এক লক্ষ দশ হাজার +) টাকা। আমার নিজেস্ব মালামাল সমুহ:
১। ল্যাপটপ= ২ টা সচল
২। কালার প্রিন্টার-৪ টা- ১সচল
৩। স্ক্যানার= ১টা সচল
৪। সিম সহ মডেম- ১টা সচল
৫। লেমিনেশন মেশিন- ১টা সচল
৭। লেজার প্রিন্টার - ২টা- ১টা সচল
৮। টেবিল ফ্যান- ১টা সচল
৯। কম্পিউটার টেবিল , চেয়ার, টুল ইত্যাদি।
১০। হাওয়া দেয়া মেশিন- ১টা।
১১। আরো ছোটোখাট মালামাল।
বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব এ,কে,এম ফারুক আমায় খুব ভাল সহযোগিতা করেন। তাঁর সহোযোগীতা ও আন্তরিকতায় আমি এখন অনেক খুশি।
লক্ষী রানী রায়
উদ্যোক্তা
৩নং মুকুন্দপুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার
কাহারোল, দিনাজপুর
মোবাইল : ০১৭১৯৪৬৯৯৪৯
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস